প্রবাসী সাজু আহমেদ এর অভিযোগ বসতবাড়ি ও জানমালের নিরাপত্তা হুমকির মুখে

ব্রিট বাংলা রিপোর্ট: যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাজু আহমেদ বসত বাড়ী ও জানমালের হেফাজতের দাবী জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ইংল্যান্ডে জন্ম নিলেও বাংলাদেশের প্রতি রয়েছে মায়া ৷ মরহুম বাবার কষ্টের অর্জিত সম্পত্তি রক্ষা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ আজ দেশে যাওয়াটাই নিরাপদ মনে করছিনা ৷

বু্ধবার ২১ শে নভেম্বর, পূর্ব লন্ডনের ব্রিক লেইনের একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটিশ বাংলাদেশী সাজু আহমদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা কে এম আবু তাহের চৌধুরী ৷ লিখিত বক্তব্যে বলা হয়

আমি সাজু আহমদ, পিতা: মরহুম সোনা মিয়া, গ্রাম ও ডাক: দশঘর, থানা:বিশ্বনাথ সিলেট
আমি বর্তমানে পরিবার সহ যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছি। স্থানীয় বাংলাদেশী মহলে আমার পিতা একজন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং দেশে বিদেশে বিভিন্ন দাতব্য কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন।আমার পিতার উত্তরাধিকারী হিসেবে আমি বিভিন্ন দাতব্য কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছি।
আমার দেশের বাড়ি বিশ্বনাথ থানাধীন দশঘর গ্রামে আমার পৈতৃক বসতভিটা রয়েছে।

আমাদের বসতবাড়ি আনুমানিক ৪ একর ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। দশঘর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্বদিকে অবস্থিত আমাদের বাড়িটি স্থানীয়ভাবে স্কুলবাড়ি নামে পরিচিত। আমরা স্থানীয়ভাবে বাড়িতে না থাকায় আমাদের কর্মচারী হিসেবে ডিজন মালাকার, (পিতা দিরু মালাকার, সাকিন দশঘর,বিশ্বনাথ সিলেট) বাড়িটি দেখাশোনা করে আসছে। এযাবতকাল পর্যন্ত অত্যন্ত নিরাপদে আমাদের সম্পত্তি ভোগাধিকার করে আসছি।
কিন্ত অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, বর্তমানে একটি কুচক্রী মহলের নজর আমাদের বিষয় সম্পত্তির উপর পড়েছে।

বিগত ৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ আমি দেশে গেলে সেখানে আমার বাড়ির জায়গা জমি জরিফ করতে চাইলে স্থানীয় আবুল হোসেন মেম্বার আমাকে বাঁধা প্রদান করেন।

এবং তিনি আমাকে হুমকি দমকি দিয়ে জমির জরিফে বাঁধা সৃষ্টি করেন। এছাড়া আরো দুটি স্থানে দাগ নাম্বার ৮০০২, ৭৮৩৪, ৭৮৩১, ৭৮৩২ ও খতিয়ান নাম্বার ১৬৭৯, ৬৬৭, ৬০০, ৬০০, এ সকল দাগ মিলে সর্বমোট ৭১ শতক জমি প্রায় ২০ বছর থেকে জবর দখল করে আসছেন।
আমাদের বাড়ির অগণিত সুপারি, নারিকেল ও অন্যান্য ফলজবৃক্ষ এবং একাধিক মৎস্য ভর্তি পুকুর রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশিত একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প অনুসরণ করে দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের বাড়িতে বিভিন্ন কৃষিজ পন্যাদি উৎপাদনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এমতাবস্থা গত ১৭ অক্টোবর ২০১৮ইংরেজি তারিখে সকাল ১১টার সময় স্থানীয় আবুল হুসেন মেম্বার (৫৫), পিতা মৃত নওয়াব আলী, দশঘর,বিশ্বনাথ,তার পুত্র আমজাদ হুসেন (২১), বাচ্চু (৫০) পিতা অজ্ঞাত, (তাদের সকলের একই ঠিকানা) সহ অজ্ঞাত আরো ১০ জন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা সজ্জিত হয়ে আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে এবং আমার কর্মচারী ডিজন মালাকারকে হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে।

এবং বলে এই এলাকায় থাকতে হলে চাঁদা না দিয়ে থাকতে পারবেনা। এখানে সরকারের হুকুমে চলে না। তাদের হুকুমে চলে। এতে ডিজন মালাকার প্রতিবাদ করলে উপল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে এবং তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি রেখে বৃক্ষাদি থেকে সুপারি, নারকেল ও পুকুরে জাল ফেলে মাছ নিয়ে যায়। প্রায় দুই ঘন্টা যাবত তান্ডবের মাধ্যমে তিনটি ভ্যানগাড়ি লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। এমতাবস্থা ডিজন মালাকার উপায়ন্ত না দেখে প্রতিবাদ করতে থাকে আবারো তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চীত করে। হামলাকারীদের মধ্যে বর্ণিত আবুল হুসেন মেম্বার ও বাচ্চু তাকে মাটিতে ফেলে লাথি ও ঘোষি মারে এমনকি তাদের হাতের রামদা দিয়ে আঘাত করলে অল্পের জন্য ডিজন মালাকার রক্ষা পায়। এরপর তারা শাসাইয়া অত্র এলাকায় থাকতে হলে চাঁদা না দিয়ে বসবাস করতে পারবে না বলে যায়।
এই ঘটনার পর থেকে প্রাণভয়ে ভীত ডিজন মালাকার আমাদের বাড়িতে যেতে পারছে না। অপরদিকে বর্নিত দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন সময় আমার বাড়ির সামনে দেশী অস্ত্রশস্ত্র সহকারে মহড়া দিচ্ছে। এমতাবস্থা আমার বাড়ির এলাকা একটি ভীতিকর পরিস্থিতির বিরাজ করছে।

সম্প্রতি একাধিকবার তারা বিভিন্ন নাম্বার থেকে আমার লন্ডনের ফোনে ফোন করে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

ফোনে তারা বলে তাদের কথা না শুনিলে দেশে গেলে শত টুকরা করে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
আমরা প্রবাসীরা এখান থেকে বহু কষ্টের মাধ্যমে উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা স্বদেশে প্রেরণের মাধ্যমে আমরা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রেখে আসছি। তদুপরি আমাদের জানমাল হুমকির সম্মুখীন। বর্ণিত আবুল হুসেন মেম্বার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দশঘর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি হওয়ায় রাজনৈতিক বিভিন্ন মুখী প্রভাব খাটিয়ে সে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে নিষ্ক্রিয় করে রাখছে। গত ১০ বছর যাবত ইউনিয়নের কোন নির্বাচন না হওয়ায় এবং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইলিয়াস গুমের আন্দলনে জড়িত থাকায় দেশ ছেড়ে লন্ডনে চলে আসেন। তারপর মেম্বার আবুল হুসেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছে। সে দশঘর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি যার জন্য তার মতামত এবং হাত অনেক লম্বা এমতাবস্থায় অসহায় প্রবাসীগণ তার কাছে জিম্মী। আবুল হোসেন মেম্বার এলাকায় প্রচার করছে অল্প দিনের মধ্যে সরকার পরিবর্তন হলে বসতবাড়ি দখল করে নিবে।
অতএব বিনীত নিবেদন এই যে, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে একজন আইন মান্যকারী প্রবাসী বাংলাদেশীর জানমালে হেফাজতের নিমিত্তে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করতে

যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন প্রবাসী মন্ত্রণালয় সিলেটের ডি আইজি, সাবেক এম পি শফিকুর রহমান সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সুদৃষ্টি কামনা করছি ৷

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় এব্যাপারে তিনি অভি যোগ দাখিল করেছেন ৷ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিবারের পক্ষে সানুর আহমদ মোহাম্মদ সিদ্দেক আলী ৷ এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মেম্বার আবুল হোসেনের তার বক্তব্যে জানান,সাজু আহমদ তার চাচাত বোনের ছেলে।

দীর্ঘদিন যাবত তার জায়গা সম্পত্তি তিনি দেখাশুনা করলেও দখল করে রাখেননি। সে দেশে গেলে নিজ বাড়ীতে সম্পত্তি ভোগদখল করে। বর্তমানে সাজু আহমদের চাচাত ভাইদের সাথে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ সৃস্টি হলে আমি তা মিমাংশার উদ্যোগ নিয়ে সে আমার উপর ক্ষেপে যায়। এছাড়া সাজু আহমদ হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখলেরও চেস্টা করছে বলে অভিযোগ করেন আবুল হোসেন মেম্বার।

Advertisement