ব্রিটবাংলা ডেস্ক : আর মাত্র ১৭ দিন বাদে আগামী ২৯শে মার্চ ব্রিটেনকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এর ভেতরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে শূণ্য হাতে ফিরবে না কি কিছু পাবার আশায় আরো চেষ্টা করবে। মঙ্গলবারের পার্লামেন্টে এমপিদের ভোটে প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট ডিল প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে কি হবে ব্রেক্সিটের?
ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে সোমবার দিন-রাত মেরাথন বৈঠক করে ডিলকে মোটামুটি সাইজে নিয়ে এসেও মঙ্গলবার পার্লামেন্টে এমপিদের কাছে দ্বিতীয় দফায় পরাজিত হন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরিজা মে। পার্লামেন্টে ভোটাভুটির আগে ভাঙ্গা গলায় ব্রেক্সিট ডিলে সমর্থনের জন্যে এমপিদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দিন শেষে ব্রেক্সিট ডিল নিয়ে দ্বিতীয় দফায় এমপিদের ভোটে বড় ব্যবধানে পরাজিত হন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরিজা মে। ১৪৯ ভোটের ব্যবধানে প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট ডিল প্রত্যাখ্যান করেন এমপিরা।
প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধকে উপেক্ষা করে ইইউ উইথড্রল ডিলের (ব্রেক্সিট ডিল) বিপক্ষে ৩৯১ জন এমপি ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে ২৩৮ জন লেবার, ৭৫ জন টোরি, ৩৫জন এসএনপি, ১১ জন লিবডেম, ১০ জন ডিইউপিসহ অন্যান্য দলের এমপিরা রয়েছেন। অন্যদিকে ডিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ২৪২জন এমপি। এরমদ্যে ২৩৫জন টোরি, ৩ জন স্বতন্ত্র এবং ৩জন লেবার এমপি রয়েছেন। এই তিন লেবার এমপি হলেন ক্যাভিন ব্যারন এমপি, ক্যারোলাইন ফ্লিন্ট এমপি এবং জন ম্যান এমপি।
এর আগে গত জানুয়ারীতে রেকর্ড সংখ্যক ২৩০ ভোটের ব্যবধানে প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট ডিল পরাজিত হয়েছিল। এরমধ্যে ১১৮ জন টোরি এমপি টোরির এমপি প্রধানমন্ত্রীর ডিলের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। এবার এই সংখ্যা কমে ৭৫ জনে নেমে এসেছে।
ব্রেক্সিটের আর মাত্র ১৭ দিন বাকি আছে। আগামী ২৯শে মার্চ ব্রেক্সিট হতে হবে। তাই মঙ্গলবার পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট ডিল এমপিদের ভোটে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ফলে নতুন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও ভোটের পরে প্রধানমন্ত্রী এমপিদের সামনে পরবর্তী করণীয়গুলোও উপস্থাপন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট ডিল প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ফলে স্বাভাবিকভাবেই নো ডিলের দিকে যাচ্ছে ব্রেক্সিট। কিন্তু সেটা প্রধানমন্ত্রী চাইলেই হবে না। নো ডিলে ব্রেক্সিট হবে কি না, তাও নির্ধারণ করে দিবেন এমপিরা। তাই বুধবার পার্লামেন্টে এমপিরা নো ডিলে ব্রেক্সিট চান কি না, তার উপর ভোট দেবেন। যদি এমপিরা নো ডিলে ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দেন, তাহলে তো শূণ্য হাতে ২৯শে মার্চ ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসবে ব্রিটেন। আর যদি এমপিরা এমপিরা নো ডিলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে বৃহস্পতিবার আরেকটি ভোট হবে ব্রেক্সিটের তারিখ পেছানোর জন্যে। তাতেও যদি এমপিরা ব্রেক্সিটের তারিখ পেছানোর বিপক্ষে রায় দেন, তাহলে ২৯ তারিখই ডিভোর্স কার্যকর হবে। আর যদি তারিখ পেছানোর পক্ষে রায় দেন তাহলে পরদিন ঘুম থেকে উঠেই প্রধানমন্ত্রী থেরিসা মে’কে ব্রাসেলসে গিয়ে ইউরোপিয়ান কমিশনের সামনে ব্রিটিশ এমপিদের মতামত উপস্থাপন করতে হবে। কমিশন যদি ব্রিটিশ এমপিদের প্রস্তাব গ্রহণ করে তাহলেই পেছাবে ব্রেক্সিট। আর না হলে শূন্য হাতেই ব্রিটেনকে বেরিয়ে আসতে হবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে। যদিও পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ব্রেক্সিটের তারিখ পেছানোর পাশাপাশি দ্বিতীয় রেফারেন্ডামের অপশন দিয়ে রেখেছেন। এমপিরা চাইলে দ্বিতীয় রেফারেন্ডামের দিকেও যেতে পারেন।
ব্রেক্সিট : জেনে নিন কি হচ্ছে আগামী ১৭ দিনের ভেতরে
Advertisement