এক বার নয়, দুই বার নয়, ৪৪ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবনে। যার কারণে বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনটি। আর যেনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা না ঘটে সে জন্য বর্তমানে সব সময় পাহারা বসানো হয়েছে। তবে এর সদস্যরা বলছেন যে কোনো সময় এটি ভেঙ্গে পড়তে পারে।জানা যায়, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবন একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ। শতাব্দী প্রাচীন এই ভবন বহু ইতিহাসের সাক্ষী। কিন্তু সেই ভবনই আর কতদিন রক্ষা করা যাবে, তা নিয়ে এমপিদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। বলার চলে এটি ব্রিটিশদের অহংকারের জায়গা।সম্প্রতি হাউস অফ কমন্সে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ভবনের বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি চুঁইয়ে পড়ছে। বার বার অগ্নি কাণ্ডের কারণে বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা গেছে। সংস্কার করা হলে মূল্ ভবন ঠিক রাখতে গিয়ে সে ভাবে সংস্কার করা হয়নি। আগুন লাগলে তা নেভানোর মতো যথেষ্ট ব্যবস্থা নেই। ফলে আবারও বড় কোনো বিপর্যয় ঘটলে ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। অবিলম্বে এই ভবনের সংস্কার প্রয়োজন বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। খবর ডয়চে ভেলেরবর্তমান সংসদের সদস্যদের বক্তব্য হচ্ছে, ভবনটির এখন যে অবস্থা তা সংস্কার করতে বহু অর্থ ব্যয় করতে হবে। তবে কিছু ঠিক হবে। তবে এক্কেবারে পূর্বের অবস্থায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে না। কিন্তু তা তাড়াতাড়ি করতে হবে আরো সময় ব্যয় করলে খরচ বহু গুণ বেড়ে যাবে। যা করদাতাদের টাকা থেকেই নিতে হবে। এছাড়া আর অপেক্ষা করলে ভবনটি সংস্কারের অযোগ্যও হয়ে পড়তে পারে। এখনো পর্যন্ত সামান্য কাজ করে সপ্তাহে দুই মিলিয়ন পাউন্ড করে খরচ হয়েছে।
ওয়েস্টমিনস্টার রাজপ্রাসাদটিকেই যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর আগেও এর সংস্কার নিয়ে বারবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কখনোই সামগ্রিক সংস্কারের ব্যবস্থা হয়নি। আলোচনাও খুব ধীর গতিতে এগিয়েছে।২০১৮ সালে এমপিরা ভোটাভুটির মাধ্যমে ঠিক করেছিলেন, ২০২০ সালে ভবনটি কিছুদিনের জন্য খালি করে দেওয়া হবে। সে সময় সংস্কারের কাজ করা যাবে। কিন্তু ২০২০ সালে সকলে পার্লামেন্ট ভবন ছেড়ে যেতে চাননি। ফলে সংস্কারও সম্ভব হয়নি।যারা ভবনটি ছেড়ে যেতে চাননি, তারা বার বার বলেছেন, পার্লামেন্ট ঠিকমতো সংস্কার করতে হলে বহু বছর সময় লেগে যাবে। এতদিন ওই ভবন ছেড়ে অন্যত্র পার্লামেন্ট চালানো সম্ভব নয়।২০১৬ সাল থেকে পার্লামেন্ট ভবনে অন্তত ৪৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে এখন ২৪ ঘণ্টা দমকলকর্মীরা ভবনটি পাহারা দেন। ১৮৩৪ সালে অগ্নিকাণ্ডেই নষ্ট হয়েছিল পুরনো ওয়েস্টমিনস্টার প্রাসাদ। এরপর চার্লস ব্যারি নামক এক স্থপতি নতুন ভবনটি তৈরি করেন। নিও গথিক স্থাপত্যের সেই ভবনই এখন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট।