ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের এক সভামঞ্চে মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিনসহ কয়েকজন নেতাকে বসতে না দেওয়ায় মহিউদ্দিন অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়েছেন। হাসিনা মহিউদ্দিন প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী এবং উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মা। যদিও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেছেন, কারা মঞ্চে বসবেন সে বিষয়ে আগে থেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত ছিলো।
গত রবিবার চট্টগ্রামের একটি কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা এবং ছয় বিভাগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে হাসিনা মহিউদ্দিনসহ কয়েকজন মঞ্চে বসতে চাইলে সভা পরিচালনায় দায়িত্বে থাকা আ জ ম নাছির উদ্দিন জানান, তাদের মঞ্চে থাকার সুযোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে মহিউদ্দিন অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাছিরের সমালোচনা করেন। গতকাল বিকালে প্রতিবাদ সভাও করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠানে কারা মঞ্চে বসবেন তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আগের রাতে বৈঠক করে ঠিক করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের শুরুতে বার বার ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরও যারা প্রটোকল মানেননি শৃঙ্খলার স্বার্থে তাদেরকে মঞ্চ থেকে নেমে সামনের আসনে বসতে অনুরোধ করা হয়েছে, কাউকে নামিয়ে দেওয়া হয়নি। আমি কাউকে নামিয়ে দেওয়ার কেউ না। দলের নির্দেশমতো সভায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। বিষয়টিকে ইস্যু করার কোনো সুযোগ নেই।’
নাছির বলেন, ‘মঞ্চ থেকে নামতে যাদের অনুরোধ করা হয়েছে, তারা অনুরোধ রেখেছেনও, এ কারণে সমসাময়িককালে সবচেয়ে সুশৃঙ্খল একটি সভা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সভা শেষে কারা কোন উদ্দেশ্যে বিষয়টিকে ইস্যু করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন সেটা দলের হাইকমান্ড জানবেন।’
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আনুমানিক সাড়ে ১২টায় আমি সভায় যোগ দিই। ওখানে কোনো গোলমাল আমি দেখিনি। এই ধরণের ঘটনাও কেউ আমাকে জানায়নি। যখন ঢাকার পথে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে যাই, তখন ওই বিষয়টা একজন আমাকে জানালো। কিন্তু ওখানে কেউ এ বিষয়ে আমাকে কিছু বলেনি এবং কোনো অভিযোগও কোনো পক্ষ থেকে আসেনি। তবে আমি জানলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী হিসেবে মঞ্চে বসতে চাইলে অ্যালাও (অনুমতি) করতাম।’
অন্যদিকে গতকাল বিকালে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী নেতাকর্মীরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের মহিউদ্দিন অনুসারী নেতাকর্মীরা যোগ দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামের আবেগ। তার স্ত্রীকে এভাবে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।’