মাদ্রাসাছাত্রকে নিপীড়নের পর পিটুনি, ২ শিক্ষক গ্রেফতার

ব্রিট বাংলা ডেস্ক : লক্ষ্মীপুরে এক মাদ্রাসাছাত্রকে নিপীড়নের পর পিটুনির অভিযোগে দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজার এলাকার আত-তামরীন ইন্টারন্যাশনাল হিফজুল কোরআন মাদ্রাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতাররা হলো- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ মোহাম্মদ ইউসুফ ও যৌন নির্যাতনকারী শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ। আব্দুর রশিদ ভোলার বোরহান উদ্দিন থানার কাচিয়া ইউনিয়নের চকডোষ গ্রামের দক্ষিণ চকডোষ গ্রামের কারি সিরাজুল হকের ছেলে। মাসুম বিল্লাহ মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক ও কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার উত্তর হাওলা ইউনিয়নের ফেনুয়া গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিশু আত-তামরীন ইন্টারন্যাশনাল হিফজুল কোরআন মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। মাদ্রাসায় আবাসিকে থেকে সে পড়ালেখা করত।

গত কয়েক দিন আগে শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ খাওয়ার রুমে ডেকে নিয়ে ওই শিশুকে যৌন নির্যাতন করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণনাশ করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।

সম্প্রতি মাদ্রাসা সাত দিনের জন্য ছুটি দিলে শিশুটি অন্যদের মতো বাড়িতে যায়। পরে মাদ্রাসা খোলা হলেও শিশুটি বাড়ি থেকে আসতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু মাদ্রাসায় যেতে মা তাকে বাধ্য করে। এ সময় শিশুটি তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা জানায়।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে ওই শিশুর মা ও আত্মীয়স্বজন মাদ্রাসায় গিয়ে অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদকে ঘটনাটি জানায়। ঘটনাটি তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ পরে এমন ঘটনা যেন না ঘটে এ জন্য অনুরোধ জানান।

এদিকে অধ্যক্ষ ওই ঘটনার কোনো তদন্ত না করেই ঘটনা প্রকাশ করে মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে পর দিন শিশুটিকে বেদম প্রহার করে আটকে রাখে। সোমবার মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে শিশুর মা ও আত্মীয়স্বজন মাদ্রাসায় যান। শিশুটিকে আহতাবস্থায় দেখতে পেয়ে তারা পুলিশে খবর দেয়।

পুলিশ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আব্দুর রশিদ ও মাসুম বিল্লাহকে আটক করে। পরে এ ঘটনায় শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় দুই শিক্ষককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

শিশুটির মা বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে শিক্ষকরা খুব খারাপ কাজ করেছে। আমি অধ্যক্ষের কাছে বিচার চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমার ছেলেকে পিটিয়ে জখম করেছে। আমি তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।

এ ব্যাপারে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি একে ফজলুল হক বলেন, শিশুর মায়ের করা মামলায় আটক দুই শিক্ষককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Advertisement