ব্রিট বাংলা ডেস্ক : জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, সুবর্ণজয়ন্তী মূল্যায়ন করলে দেখা যায় স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। স্বাধীনতার পূর্বে পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের সঙ্গে বৈষম্য সৃষ্টি করেছিল। তখন স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা
সংগ্রাম সৃষ্টি হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা স্বাধীন হয়েছি কিন্তু বৈষম্য থেকে মুক্তি পাইনি। তিনি আরও বলেন, ১৯৯১ সালের পর সংবিধান সংশোধন করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে।
দলীয়করণের মাধ্যমে দেশের চাকরি, ব্যবসা এবং আইনের শাসনে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতাসীন দল না করলে চাকরি মেলে না, ব্যবসা করা যায় না। আবার ক্ষমতাসীন দলের জন্য এক ধরনের আইন আর সাধারণ জনগণের জন্য ভিন্ন আইন। বৈষম্যের কারণে অওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয়করণের মাধ্যমে দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি করে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছে। তারা হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে আবারও সংগ্রাম করতে হবে। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে জাতীয় পার্টি রাজনীতি করছে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে শনিবার গাজীপুরের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. মো. জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে অর্ধশত নেতাকর্মীর জাতীয় পার্টিতে যোগদান অনুষ্ঠানে জিএম কাদের এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তরের পর সংবিধান সংশোধন করে এমন সরকার ব্যবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছে যাকে সংসদীয় গণতন্ত্র বলা যায় না। কারণ, দেশের নির্বাহী বিভাগ ও আইনসভা এবং বিচার বিভাগের ৯৫ ভাগই সরকারপ্রধানের হাতে। তার ইচ্ছা-অনিচ্ছার বাইরে কোনো কিছু সম্ভব নয়। এ কারণে দেশে আইনের শাসন নেই, সমাজে সুশাসন নেই। দেশের মানুষের নিরাপত্তা নেই। সড়কে নিরাপত্তা নেই, বাস-ট্রেনে নিরাপত্তা নেই, ব্যবসায়-বাণিজ্যেও নিরাপত্তা নেই। চাঁদা ছাড়া কেউ ব্যবসা করতে পারে না। করোনায় প্রতিদিন যত লোক মারা যায়, তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় সড়ক দুর্ঘটনায়। পরিবহণ সেক্টর সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই, মনে হচ্ছে পরিবহণ সেক্টরই সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, দেশে ক্রান্তিকাল চলছে। আওয়ামী দুঃশাসনে দেশের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশের মানুষ দিশেহারা হয়ে আওয়ামী অপশাসন থেকে মুক্তি চায়। রাস্তায় বিজিবি নামিয়ে সরকার প্রমাণ করেছে, দেশে আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ নেই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। তাই প্রতিদিনই বিশিষ্টজনরা দলে দলে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, প্রতিদিনই ধর্ষণ হচ্ছে, এটা কি সুবর্ণজয়ন্তীর উপহার? আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সন্ত্রাস ও দুঃশাসন থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দেবে জাতীয় পার্টি। যোগদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. আবুল হোসেন, ফারিন হাসান, মিথিলা রোয়াজা। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন।