আমরা কী ধরনের দল করি, প্রশ্ন মেজর হাফিজের

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ধানের শীষের ৩০০ প্রার্থীকে দলের পক্ষ থেকে ডেকে হারার কারণ জানতে চাওয়া হয়নি। ওই নির্বাচনের বছরপূর্তিতে এর কড়া সমালোচনা করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ। এ বিষয়ে আলোচনার একপর্যায়ে বিস্মিত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘কী ধরনের দল করি আমরা!’

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত ‘বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং স্বাধীনতার ৪৯ বছর প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় তিনি এ বিস্ময় প্রকাশ করেন।

মেজর হাফিজ বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীরা গত কয়েক বছর ধরে অনেক নির্যাতিত। একাদশ নির্বাচনে বিএনপির নারী কর্মীদের পর্যন্ত নির্যাতন করা হয়। আমি নিজে প্রার্থী ছিলাম গত নির্বাচনে, ঘর থেকে বের হতে পারেনি। নিজের ভোটটা পর্যন্ত দিতে পারিনি। দুদিন অবরুদ্ধ ছিলাম। কই, নির্বাচনের পর তো আমাদের কেউ এ বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করেননি। দল তো ৩০০ প্রার্থীকে ডেকে জিজ্ঞেস করেনি, কী হয়েছিল তোমাদের সঙ্গে? তোমরা কেন নির্বাচনে হারলে? তা হলে কী ধরনের দল করি আমরা!’

এ সমস্যা উত্তরণে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান দলের জ্যেষ্ঠ এ নেতা। বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের একতাবদ্ধ হতে হবে। নেতার ডাকের অপেক্ষায় না থেকে রাজপথে নেমে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। তা হলে এই দেশ ১৯৭১ সালের মতো ফিরে পাবে নিজের মর্যাদা।

জেএসডির কাউন্সিলের কথা উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জেএসডি বিএনপি’র তুলনায় অনেক ছোট দল। তারা যে কাউন্সিল অধিবেশনটা করেছে ইমপ্রেস করেছে আমাকে, এটা আমার সোজা কথা। তারা যদি করতে পারে, তা হলে বিএনপি কি আজকে ইমারজেন্সি কাউন্সিল করতে পারে না?’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্দেশে ডা. জাফরউল্লাহ বলেছেন– ‘নিশ্চয়ই তুমি একদিন আমাদের প্রধানমন্ত্রী হবে। তবে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তুমি তা হতে চাও কিনা?’ এর পর তিনি তারেক রহমানকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘চাটুকারদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকলে কোনো দিনও তা সম্ভব নয়। চাটুকারিতা ভালো লাগলেও সাবধান থাকতে হয়। তিনি তারেক রহমানকে দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দূরে থেকে এখানকার আন্দোলন করা সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির এক লাখ লোক জামিনে আছে। তাদের ডাক দেন, তারা দুদিনের জন্য হাইকোর্টের সামনের প্রাঙ্গণে এসে বসে থাকুক। এর মধ্যে খোদার তখ্ত নড়ে যাবে, আর হাসিনা তো উড়ে যাবে।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আজকের দিনে আমাদের প্রত্যাশা হলো— যদি বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে চাই, রাজবন্দিদের মুক্তি চাই, মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্র সবকিছুর অবসান চাই, দেশের গণতন্ত্র চাই, সংসদ বাতিল চাই, সরকারের পদত্যাগ চাই, নতুন নির্বাচন চাই, তা হলে আন্দোলন এখন থেকেই ধারাবাহিকভাবে শুরু করতে হবে। এই আন্দোলন সমগ্র জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। যদি কালকে না পারি, তা হলে পরশু পারব। পরশু দিন না পারলে, তিন দিন পরে পারব। তিন দিন পরে না, পারলে ৩০ দিন পরে পারব। কিন্তু আমাদের পারতেই হবে। কারণ আমাদের অস্তিত্বের জন্যই এ লড়াই।’

আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।

Advertisement