করোনায় ৪৫ লাখ ৩২ হাজার মৃত্যু দেখল বিশ্ব

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে প্রায় নয় হাজার মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে নতুন আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছয় লাখ সাত হাজার ছাড়িয়েছে।সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানি দেখল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যদিও দৈনিক মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় সংক্রমিতের সংখ্যা ২১ কোটি ৮৫ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অন্য দিকে প্রাণ হারানোদের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৪৫ লাখ ৩২ হাজারে পৌঁছে গেছে।

বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় শনাক্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন আট হাজার ৯২৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় প্রাণহানি বেড়েছে ১৬০০-র বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৩২ হাজার ৫০৮ জনে পৌঁছেছে।এছাড়া নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ছয় লাখ সাত হাজার ১৮৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ল প্রায় এক লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে রোগটিতে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২১ কোটি ৮৫ লাখ ১১ হাজার ৬১৫ জনে দাঁড়িয়েছে।

এ দিকে শেষ এক দিনে বিশ্বে করোনার থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানি ঘটল যুক্তরাষ্ট্রে। একই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৫৫ হাজার ৮৪৮ জন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ২৩১ জন। মহামারি করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এখন পর্যন্ত চার কোটি এক লাখ ১৩ হাজার ৯৪৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মারা গেছেন ছয় লাখ ৫৭ হাজার ৯০৯ জন কোভিড রোগী।অপর দিকে বিশ্বে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৯৫ জন। আর নতুন করে করোনায় শনাক্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৮১৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা এরই মধ্যে ৬৯ লাখ ১৮ হাজার ৯৬৫ জনে পৌঁছে গেছে। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৮৩ হাজার ২২৪ জন রোগীর।

এ দিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় ওপরের দিকেই রয়েছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র খ্যাত পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরান। শেষ এক দিনে দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৪৩ জন। আর নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩১ হাজার ৩১৯ জন। মহামারি করোনা ভাইরাসের শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ৪৯ লাখ ৯২ হাজার ৬৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন এক লাখ সাত হাজার ৭৯৪ জন।এছাড়া শেষ ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায় করোনায় সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৩২ জন। এছাড়া নতুন করে কোভিড শনাক্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৫৩৪ জন। আর মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪০ লাখ ৮৯ হাজার ৮০১ জনে পৌঁছে গেছে। এরই মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৩৩ হাজার ২৩ জনের।

করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। শেষ এক দিনে দেশটিতে করোনার থাবায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৮২ জন। আর নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৫৮৬ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি সাত লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৭ জন। আর মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৮০ হাজার ৫২৫ জনের।

এ দিকে কোভিড আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৬২ জন। আর নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৭২ জন। এছাড়া দেশটিতে মোট আক্রান্ত তিন কোটি ২৮ লাখ ১০ হাজার ৮৯২ জন। আর মারা গেছেন চার লাখ ৩৯ হাজার ৫৪ জন।এছাড়া এখন পর্যন্ত ৬৭ লাখ ৬৫ হাজার ৭০৮ জন ফ্রান্সে, আর যুক্তরাজ্যে ৬৭ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮১ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে ৪৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৯১ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৬৩ লাখ ৮৮ হাজার ৩৩১ জন, এছাড়া স্পেনে ৪৮ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫ জন, মেক্সিকোতে ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ২৬৪ জন এবং জার্মানিতে ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার ৪১৮ জন কোভিড সংক্রমিত হয়েছেন।

অন্য দিকে করোনায় শনাক্ত হয়ে এখন পর্যন্ত এক লাখ ১৪ হাজার ৪৪৪ জন ফ্রান্সে, আর যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৩২ হাজার ৫৩৫ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে এক লাখ ২৯ হাজার ২২১ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৫৬ হাজার ৭১০ জন, এছাড়া স্পেনে ৮৪ হাজার ৩৪০ জন, মেক্সিকোতে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৪৯১ জন এবং জার্মানিতে ৯২ হাজার ৭৩০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।

Advertisement