চির নিদ্রায় শিশু জায়ান

    ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: জায়ান চৌধুরী ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করত। তার নানার বাসার পাশে বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠ। নানা বাড়ি এলে সে এই মাঠে খেলত। আজও সে এই মাঠে এসেছিল, তবে অন্যের কাঁধে। নীরব-নিথর হয়ে। শ্রীলঙ্কায় জঙ্গিদের বোমা হামলায় নিহত জায়ানের জানাজা আজ বুধবার বিকেল সোয়া পাঁচটায় চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর তাকে বনানী কবরস্থানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটে শহীদদের কবরের পাশে দাফন করা হয়।

    জায়ানের জানাজা উপলক্ষে আজ বিকেলে চেয়ারম্যানবাড়ি মাঠে আসরের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করা হয়। নামাজ পড়ান বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম। নামাজের পর বিকেলে সোয়া পাঁচটায় জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা নামাজ পড়ান বায়তুল মোকাররমের খতিব। এর আগে জায়ানের নানা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম সবার উদ্দেশে কথা বলেন। এ সময় তিনি আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তিনি সবার কাছে তাঁর নাতি, জামাতা ও মেয়ের জন্য দোয়া চান।

    সমবেত মানুষের উদ্দেশে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আপনাদের সহানুভূতি পেয়ে আমরা অনেক শক্তি অর্জন করেছি। আপনারা দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন জায়ানের মাকে ধৈর্য ধরার শক্তি দেন। জায়ানের বাবাও বোমার আঘাতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। সবাই দোয়া করবেন যেন আমরা এই ব্যথা কাটিয়ে উঠতে পারি।

    জানাজা নামাজের পর জায়ানের মরদেহ বনানী কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিকেল সাড়ে পাঁচটার কিছু পরে তাকে দাফন করা হয়। এরপর সবাই তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করেন। এ সময় সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজন দোয়ায় শরিক হন।

    এর আগে আজ দুপুর দুইটা ৩৫ মিনিটে বনানীতে জায়ানের নানা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বাসায় যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাসায় প্রবেশের পর সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। শেখ সেলিমসহ আত্মীয়-স্বজনেরা এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহত জায়ানের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। পরে বিকেল তিনটা ৫০ মিনিটে সেখান থেকে বের হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী।

    শ্রীলঙ্কায় গত রোববারের ধারাবাহিক বোমা হামলার সময় নিহত বাংলাদেশি শিশু জায়ান চৌধুরীর লাশ আজ দুপুরে ঢাকায় এসে পৌঁছায়। আজ বেলা পৌনে একটায় শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসের বিমানে জায়ানের মরদেহ দেশে আসে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শিশুটির লাশ গ্রহণ করেন তার নানা শেখ ফজলুল করিম সেলিম। আজ বেলা দেড়টায় জায়ান চৌধুরীর মরদেহ বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বনানী ২ নম্বর সড়কে শেখ সেলিমের বাড়িতে নেওয়া হয়।

    জায়ানের জানাজায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মতিন খসরু, ফারুক খান, কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সা‌বেক নৌপ‌রিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংসদ শেখ ফজ‌লে নুর তাপস, আকবর খান পাঠান, ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।

    Advertisement