গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১৪ জন মারা গেছেন।শনিবার (২৪ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে রবিবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টার মধ্যে হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে তারা মারা যান।রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীর আটজন, পাবনার তিনজন, নাটোরের একজন, নওগাঁর একজন এবং চুয়াডাঙ্গার একজন মারা গেছেন।
এই একদিনে রাজশাহীর সাতজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন, নাটোরের একজন এবং পাবনার একজন করে মোট ১০ জন মারা গেছেন করোনা সংক্রমণে। এ ছাড়া করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন পাবনার দুজন, রাজশাহীর একজন এবং চুয়াডাঙ্গার একজনসহ মোট চারজন।গত ২৪ ঘণ্টায় আটজন পুরুষ এবং ছয়জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন করোনা ইউনিটে। যাদের আটজনের বয়স ৬১ বছরের ওপরে। এ ছাড়া ৫১-৬০ বছরের মধ্যে পাঁচজন এবং ৪১-৫০ বছরের মধ্যে একজন মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।পরিচালক আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ছয়জন মারা গেছেন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ)। এ ছাড়া ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন, ১, ১৪, ১৫, ১৬, ২২, এবং ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন।রবিবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১৩ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ৪১৬ জন। ২০ শয্যার আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন ২০ জন। করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত ভর্তি রয়েছেন ১৭৮ জন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৮৮ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি ৫০ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫০ জন। এই এক দিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫০ জন।
এর আগে শনিবার (২৪ জুলাই) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ৮৮ জনের নমুনায়। একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ৪৪৬ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩৫ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ৪৫ দশমিক ০৭ শতাংশ, নওগাঁর ৪৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ, নাটোরের ১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং জয়পুরহাটের ১৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।প্রসঙ্গত, চলতি জুলাই মাসের এই ২৫ দিনে মহামারি করোনায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৬৭ জন। এর মধ্যে করোনায় ১৪৩ জন এবং উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২৮৯ জন। বাকি ৩৫ জন করোনা নেগেটিভ হয়েও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন।অন্যদিকে, গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ১৬১ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ৫ হাজার ৯২৭ জন। এই ১৪ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৮ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৪৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।