চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ফের বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন নয় হাজারের বেশি মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা পাঁচ লাখ ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে।সর্বশেষ এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অপর দিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল। আর এরপরই রয়েছে রাশিয়া ও মেক্সিকোর নাম। এতে বিশ্বব্যাপী কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ কোটি আট লাখের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৪৭ লাখ ৩১ হাজারে পৌঁছেছে।বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন নয় হাজার ২৮৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ল এক হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৪৭ লাখ ৩১ হাজার ৭০৩ জনে পৌঁছে গেছে।
নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ লাখ ২৫ হাজার ৬৪৫ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ল প্রায় ৭৫ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত রোগটিতে সংক্রমিত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৩ কোটি আট লাখ ৩৮ হাজার ৯৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে।এ দিকে শেষ এক দিনে বিশ্বে কোভিড-১৯ এর ভয়াল থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানি দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৩২ হাজার ৩১৭ জন। আর মারা গেছেন দুই হাজার ২২২ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এখন পর্যন্ত চার কোটি ৩৪ লাখ তিন হাজার ৫৭৪ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়া মারা গেছেন ছয় লাখ ৯৯ হাজার ৭৪২ জন।দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল ভাইরাসটিতে মোট শনাক্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৩৯ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৪৭৩ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৬৭ জনে পৌঁছেছে। আর প্রাণ গেছে পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৩৫৭ জনের।
দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে রাশিয়ার অবস্থান। শেষ এক দিনে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৮১৭ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ১৯ হাজার ৭০৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৭৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫৫৭ জনে পৌঁছেছে। আর মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৬২৫ জনের।গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮১৫ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ১২ হাজার ৫২১ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫৬৫ জনে পৌঁছেছে। আর মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৭২ হাজার ৫৮০ জন কোভিড রোগীর।এ দিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে প্রাণহানির সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২৭৯ জন। আর নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ৯৫৭ জন। দেশটিতে মোট শনাক্ত তিন কোটি ৩৫ লাখ ৬২ হাজার ৩৪ জন এবং প্রাণ হারিয়েছেন চার লাখ ৪৬ হাজার ৮০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায় কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৪৯ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৭২০ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৪১ লাখ ৯৮ হাজার ৬৭৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার ৯৫৪ জনের।শেষ এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে কোভিড সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৮৬ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে শনাক্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৪৩৩ জন। মহামারি করোনা ভাইরাসের তাণ্ডব শুরুর পর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার ২২৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন আর মারা গেছেন এক লাখ ১৮ হাজার ১৯১ জন।উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।
