বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৫৪ লাখ ছাড়াল

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। ফলে রোগটিতে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুতেও উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) বিশ্বজুড়ে কোভিড শনাক্ত হয়েছেন সাত লাখ এক হাজার ৩৪৫ জন। আর এ রোগে মৃত্যু হয়েছে চার হাজার ৫৩১ জনের।২০২০ সালে মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এ রোগে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হালনাগাদ তথ্য প্রকাশকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে।রবিবারের তুলনায় সোমবার বিশ্বজুড়ে করোনার থাবায় সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। রবিবার বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন লাখ ৮১ হাজার ২১৫ জন। আর এ রোগে মৃত্যু হয়েছিল দুই হাজার ৯৮৫ জনের।সোমবার সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এদিন কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৯ জন। আর রোগটির থাবায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৪১ জন।

অন্য দিকে নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখল রাশিয়া। বিশ্বের বৃহত্তম দেশটিতে সোমবার প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯৩৭ জন। আর আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ২১০ জন।যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া ছাড়া অন্যান্য যেসব দেশে সংক্রমণ-মৃত্যুর উচ্চহার দেখা গেছে, সে দেশগুলো হলো- যুক্তরাজ্য (নতুন আক্রান্ত ৯৮ হাজার ৫১৫ এবং মৃত্যু ১৪৩), স্পেন (নতুন আক্রান্ত ৫৩ হাজার ৬৫৪ এবং মৃত্যু ৩০), ফ্রান্স (নতুন আক্রান্ত ৩০ হাজার ৩৮৩ এবং মৃত্যু ২৫৬), ইতালি (নতুন আক্রান্ত ৩০ হাজার ৮১০ এবং মৃত্যু ১৪২) ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্ক (নতুন আক্রান্ত ২৬ হাজার ৯৯ এবং মৃত্যু ১৫৭) এবং আর্জেন্টিনা (নতুন আক্রান্ত ২০ হাজার ২৬৩ এবং মৃত্যু ৩১)।ওয়ার্ল্ডো মিটারসের তথ্য অনুযায়ী- ২০২০ সালে মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়েছেন মোট ২৮ কোটি ১৭ লাখ ২১ হাজার ৭৪৪ জন। আর প্রাণঘাতী রোগটির থাবায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ লাখ ২২ হাজার ১৯৬ জন।এছাড়া সোমবার করোনা থেকে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি ফিরে গেছেন চার লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৮ জন। এতে বিশ্বে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত কোভিডে সংক্রমিত হওয়ার পর সুস্থতার মোট সংখ্যা ২৫ কোটি আট লাখ ৮২ হাজার ৫৫২ জনে পৌঁছেছে।

বর্তমানে বিশ্বে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ৫৪ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জনে দাঁড়িয়েছে। যদিও এই রোগীদের মধ্যে মৃদু উপসর্গ বহন করছেন দুই কোটি ৫৩ লাখ ২৮ হাজার ৩৩৩ জন। আর গুরুতর অসুস্থ অবস্থাতে আছেন ৮৮ হাজার ৭৬৩ জন।২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল এশিয়ার পরাশক্তি খ্যাত রাষ্ট্র চীনে।তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।যদিও তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে সংস্থাটি।

Advertisement