সিলেটে নির্মিতব্য হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের জন্য অসাধারণ সব সুযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। শুরু হয়ে গেছে জায়গা বরাদ্দ এবং লিজ প্রদানের কাজ। বিশেষ করে প্রবাসীরা এখানে প্রযুক্তি খাতে নিরাপদে বিনিয়োগ করতে পারেন। আর এই বিনিয়োগের সকল সুযোগ-সুবিধা ও প্রক্রিয়া তুলে ধরতে ৩০ সেপ্টেম্বর রোববার লন্ডনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এক সেমিনার। সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হবে এই সেমিনার।
বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব লন্ডনের কলাপাতা রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সেমিনারের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচাপেলের নিকটে অ্যাট্রিয়াম হলে অনুষ্ঠিত হবে এ সেমিনার। বাংলাদেশ সরকারের হাইটেক পার্ক অথোরিটির শীর্ষ কর্মকর্তারা সেমিনারে উপস্থিত থাকবেন। তারা অত্যাধুনিক পরিকল্পনায় তৈরি সিলেটের হাইটেক পার্ক সহ দেশের অন্যান্য স্থানে স্থাপিত
হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ ও স্থান বরাদ্দ পাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত নিয়ামাবলী তুলে ধরবেন। হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারীদের সরকার কি কি সুবিধা দিচ্ছে
সেসব বিষয়ও সেমিনারে তুলে ধরা হবে। আগ্রহী বিনিয়োগকারীরা যে কোনো বিষয়ে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সরাসরি প্রশ্ন করতে পারবেন। বিনিয়োগ বিষয়ে যে কোনো প্রশ্নের জবাব দেয়ার পাশাপাশি কর্মকর্তারা আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দিয়েও সহায়তা করবেন।
বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটির সচিব ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, সিলেট হাইটেক পার্কের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ব্যারিষ্টার গোলাম সারওয়ার, সহকারী প্রকল্প পরিচালক (ডিপিডি) প্রকৌশলী মো: আতিকুল ইসলাম,
স্থপতি ইকবাল হাবিব, দেশের ১২টি হাইটেক পার্কের দায়িত্বে থাকা প্রকল্প পরিচালক (পিডি) সাইদ মেহেদি হাসান, সংবাদ সম্মেলনে হাইটেক পার্ক বিষয়ে হাল নাগাদ তথ্য তুলে ধরেন। উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি সেক্রেটারি প্রকৌশলী এ কে এ এম ফজলুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের প্রেসিডেন্ট খন্দকার শিপার আহমেদ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান ফারুক প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেট হাইটেক পার্ক বিষয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার দেশের তরুণদের মেধার বিকাশের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে মোট ২৮টি হাইটেক পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করছে। প্রযুক্তি খাতের শিল্প ও সেবার বিনিয়োগের সম্মিলন হবে এসব হাইটেক পার্কে। দেশকে শ্রম নির্ভর শিল্প থেকে মেধা ও প্রযুক্তি নির্ভর শিল্পের দিকে নিয়ে যেতে সরকারের এই উদ্যোগ।
বাংলাদেশ হাই টেক পার্ক অথোরিটির সচিব ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা মতিন বলেন, এসব হাইটেক পার্ক একদিকে দেশে বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে, অন্যদিকে
দেশের তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সুষ্টি করবে। তিনি বলেন, হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকার ১১টি সুবিধা ঘোষণা করেছে। বিনিয়োগকারীদের পণ্য আমদানীতে শুল্ক দিতে হবে না। দশ বছর পর্যন্ত তাদের আয়কর মওকুপ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া আছে আরও নানা সুবিধা। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যে সিলেটের মানুষ বেশি। যুক্তরনাজ্যে বেড়ে উঠা সিলেটের নতুন প্রজন্ম প্রযুক্তি বিষয়ে বেশ দক্ষ। তারা চাইলে খুব সহজে সিলেটের হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করে সকল সুবিধা লুফে নিতে পারে।
সিলেট হাইটেক পার্কের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ব্যারিষ্টার গোলাম সারওয়ার সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, সিলেটের কোম্পানিগঞ্জে স্থাপিত সিলেট হাইটেক পার্কে আইটি বিজনেস সেন্টারের জন্য মোট ৩১ হাজার বর্গফুট
জায়গা রয়েছে। আর আইটি ইনফরমেশন সেন্টারের জন্য আছে ৪ হাজার বর্গফুট স্থান। লিজ নিয়ে অথবা ভাড়া নিয়ে এখানে প্রযুক্তি নির্ভর শিল্প স্থাপন করতে পারবেন দেশে-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। স্থান বরাদ্দ দেয়ার কাজ ইতিমধ্যে
শুরু হয়ে গেছে বলেও তিনি জানান। দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে বিদ্যুত, গ্যাস এবং ইন্টারনেটসহ প্রয়োজনীয় যোগাযোগ স্থাপনের কাজ।
তিনি বলেন, প্রত্যোকটি হাইটেক পার্ক পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তিতে বানানো হচ্ছে। থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিশাল মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠা এসব হাইটেক পার্কে বিনোদনেরও ব্যবস্থা থাকবে।
রোববারের সেমিনারে আগ্রহী সকল বিনিয়োগকারীকে উপস্থিত থাকার আহবান জানান বক্তারা। সেমনিারে টাইটেক পার্ক এবং সেখানে বিনিয়োগ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য
তুলে ধরা হবে। দেয়া হবে পরামর্শও।