আলোচনার শুরুতেই বুবলি জানালেন, এটা তাঁর আট নম্বর ছবি। মজার ব্যাপার হলো, এর আগে বুবলীর সাতটি ছবিই মুক্তি পেয়েছিল ঈদে। তাই নিজেকে সহাস্যেই ‘উত্সবের নায়িকা’ হিসেবে স্বীকার করে নিলেন। তাঁর চোখে খুশির ঝিলিক, কণ্ঠে উত্তেজনা। বুবলী বলেন, ‘এমন কপাল কজনের হয়? সেই প্রথম ছবি বসগিরিঈদ উৎসবেই মুক্তি পেয়েছিল। এরপর একে একে পরের প্রতিটি ঈদেই আমার ছবি মুক্তি পেয়ে আসছে। আমি ঈদ–কপালী!’
এই যে প্রতিটি ছবিই ঈদ উৎসবে মুক্তি পাচ্ছে, কেমন লাগে তাঁর? ভয় করে না? ছবি মুক্তির দুশ্চিন্তায় আদৌ ঈদটা কি উদ্যাপন করা হয়—একসঙ্গে এত প্রশ্ন শুনে চটজলদি জবাব দেওয়া শুরু করলেন শবনম বুবলী। বললেন, ‘ঈদের আনন্দ তো দ্বিগুণ হয়। যখন সিনেমায় আসিনি, তখন ঈদে নতুন পোশাক–আশাকে নিজেকে সাজতে ব্যস্ত থাকতাম। আর এখন কয়েক বছর ধরে আমার সিনেমাই আমার ঈদের নতুন সাজ।’
এবারের ঈদে মুক্তি পাবে বুবলী অভিনীত ছবি পাসওয়ার্ড। এই সিনেমা নাকি তাঁর অভিনয়জীবনের বিশেষ অর্জন। কেন? এর ব্যাখ্যায় বুবলী বলেন, অনেক বছর পর শাকিব খানের নিজের প্রযোজনায় ছবি মুক্তি পাচ্ছে। তিনি নিজেই ছবির সব দিক তদারক করছেন। কোনো কিছুতে আপস করেননি। মালেক আফসারীর মতো গুণী নির্মাতার হাতে এটি তৈরি হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে ছবিটি নিয়ে আমার প্রত্যাশা অনেক।’
প্রায় চার বছর পর ববির অভিনীত ছবি ঈদে মুক্তি পাচ্ছে। সেই আনন্দে ববি কয়েক মাস ধরে বুঁদ ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ বিষাদ এসে ঢেকে দিয়েছে তাঁর উচ্ছ্বাস। গত ৫ এপ্রিল ববির বাবা মারা গেছেন। সেই শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। তারপরও তো জীবন থেমে থাকে না। ঈদেই মুক্তি পাবে নোলক। ববিকে সবকিছু সামলে যোগ দিতে হবে ছবির প্রচারে।
আমরা ববির কাছে জানতে চাই—নোলক নিয়ে প্রত্যাশা কেমন? তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে হলে গিয়ে ছবি দেখার চর্চাটা বছরজুড়ে দেখাই যায় না। তবে ঈদের মতো বড় উত্সবে দর্শক ছবি দেখার জন্য প্রস্তুত থাকেন।নোলকপরিবার নিয়ে দেখার মতো ছবি। তাই ঈদেই এই ছবি মুক্তি দেওয়ার উপযুক্ত সময়।’
কী আছে ছবিটির মধ্যে যে সবাই এটা পছন্দ করবে? এটা শুনে পাল্টা প্রশ্ন ববির, ‘কী নেই এই ছবিতে? মৌলিক গল্প। প্রেম, কমেডি ও অ্যাকশন। দর্শক ছবিটি দেখে কখনো হাসবেন, কখনো কাঁদবেন।’
ববি জানান, ইউটিউবে টিজার মুক্তির পর থেকেই ছবিটি নিয়ে বেশ সাড়া পাচ্ছেন তিনি। বলেন, ‘টিজারের নিচে মন্তব্যের ঘরে কেউ কেউ কেয়ামত থেকে কেয়ামতছবির সঙ্গে এর তুলনা করেছেন। দর্শকের আগ্রহ দেখে বেশ ভরসা পাচ্ছি।’
ঈদ উত্সব যেমন বড়, এই উৎসব ঘিরে সিনেমায় সিনেমায় হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতাও হয়। এই প্রতিযোগিতায় নোলকধোপে টিকবে তো? ববি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, দর্শকই নোলককে এগিয়ে রাখবেন। তাই প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবছি না।’
নোলকছবির নায়ক শাকিব খান। অন্যদিকে ঈদের আরেক ছবি পাসওয়ার্ড–এর নায়কও শাকিব খান।‘আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে গেছে’
স্পর্শিয়া
এবারের ঈদটা স্পর্শিয়ার কাছে আলাদা। কারণ, এবারের ঈদে বড় পর্দায় অভিষেক হতে যাচ্ছে তাঁর, মুক্তি পেতে যাচ্ছে স্পর্শিয়া অভিনীত।ছবিটি নিয়ে স্পর্শিয়ার অনেক দিনের অপেক্ষা। পয়লা বৈশাখে মুক্তির কথা থাকলেও তারিখ পেছাতে পেছাতে এখন ঈদে এসে ঠেকেছে। তাই এখন আর তর সইছে না তাঁর। উত্তেজনার পারদ ওপরে উঠতে উঠতে ছাদ ছুঁয়ে ফেলেছে প্রায়!
৫ মে কার্যালয়ে হাসি হাসি মুখ নিয়ে স্পর্শিয়া বলেন, ‘আমার অভিনীত প্রথম সিনেমা অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে, তা–ও আবার ঈদে। আমার আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে গেছে।’
কিন্তু ঈদে মুক্তি পাওয়া ধুন্ধুমার অ্যাকশন আর রোমান্টিক ছবির মধ্যে সিনেমায় নতুন স্পর্শিয়াকে দেখতে দর্শক কি প্রেক্ষাগৃহে আসবেন? ভালোই যুক্তি দেন স্পর্শিয়া। বলেন, ‘ভালো গল্প, ভালো নির্মাণ—দুটোই আছে। পাশাপাশি এই ছবিতে শক্তিমান অভিনেতারাও কাজ করেছেন। ছবিটি একটি সাহসী নির্মাণ। দর্শক ছবির ব্যাপারে জানতে পারলে অবশ্যই সিনেমা হল পর্যন্ত আসবেন।’
এই ঈদের পর থেকে এক নতুন স্পর্শিয়ার উত্থান হবে। কারণ, সিনেমার নায়িকা হিসেবে নাকি এরপর একে একে ছবি আসতে থাকবে তাঁর। বন্ধন, কাঠবিড়ালি, ইতি, তোমার ঢাকা, মানুষের বাগান ছবিগুলো আছে মুক্তির কাতারে। তবে প্রতিটি ছবিই স্পর্শিয়াকে ঈদ উৎসবের অন্য নায়িকাদের থেকে আলাদা করে রাখে। অন্যরা যেখানে বাণিজ্যিক ধারার ছবি নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন, সেখানে স্পর্শিয়ার প্রতিটি ছবিই বিকল্পধারার। এসব নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমে বাণিজ্যিক ঘরানার ছবিতেই কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলাম। কিন্তু তখন প্রস্তুত ছিলাম না। আমি শিল্পী হিসেবে সব ধরনের ছবিতেই কাজ করতে চাই। তবে অবশ্যই ভালো গল্প, ভালো নির্মাণ হতে হবে। যে ছবিগুলোয় ফাইনালি অভিনয় করলাম, সেগুলো দেখলেই বুঝবেন ভালো গল্প, ভালো নির্মাণ বলতে আমি কী বোঝাচ্ছি।’
ঈদে নিজের ছবির বাইরে অন্যদের ছবি সিনেমা হলে গিয়ে দেখা হবে কি না—এ প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি কিন্তু সব সময় হলে গিয়ে অন্যদের ছবি দেখি। আর ঈদের সময় তো দেখবই।’
আবার বসন্ত ছবিতে স্পর্শিয়ার নায়ক তারিক আনাম খান। তাঁর সঙ্গে কাজের দারুণ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন স্পর্শিয়া। বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে মনে হয়েছে, অতি–আধুনিক একজন মানুষ তারিক আনাম খান। আগেও কিছু নাটকে একসঙ্গে কাজ করেছি। তাই ছবির কাজের সময় স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গাটা অনেক প্রশস্ত ছিল। তাঁকে একটা অভিনয়ের স্কুল মনে হয়েছে আমার।’