বিশেষ প্রতিবেদক : চ্যানেল এস কিচেনের সঙ্গে পরিচিত বাঙালী কমিউনিটি এক্টিভিস্টের সংখ্যা গুণে শেষ করা যাবে না। অবাঙালি অনেক অতিথির প্রশংসাও কুড়িয়েছে এই কিচেন। চ্যানেল এসের রাতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে না খেয়ে যাননি এমন অতিথির হয়তো খুঁজে পাওয়া মুশকিল হবে! আর যারা নিয়মিত কাজ করেন, তাদের জন্য রাতের খাবারের সময়টা বিরাট এক আড্ডার সুযোগ। দুনিয়ার এমন কোন সাবজেক্ট বাদ যায় না এই আড্ডা থেকে। খেতে খেতেই চলে আড্ডা। খাবার শেষ আড্ডাও শেষ। এই কিচেনের সব কিছুর নিয়ন্ত্রন কিন্তু হল শেফ নাজিম উদ্দিনের হাতে। এ কারণে চ্যানেল এস স্টাফরা মুখে মুখে এর নামও দিয়েছেন ‘নাজিম’স। নাজিম’স মানে চ্যানেল এসের সবার প্রিয় শেফ নাজিম উদ্দিন। কেউ ডাকেন শেফ ভাই।
নাজিম’স এর নিয়ম হল রান্না শেষে ওয়াটসএ্যাপ গ্রুপে দাওয়াত আসে ‘ডিনার রেডি’ বলে। তারপর কারো দেরি হলে এককভাবে ফোন কল। তারপরেও না আসলে রুমে রুমে গিয়ে তল্লাশি…। খাবার সময়ে খেতেই হবে। না হলে নির্ধারিত সময় শেষে কিচেন বন্ধ হয়ে যায়। যদিও বিশেষ অনুরোধে বিশেষ ব্যবস্থা থাকে সর্বদা। তবে যখনই যে খাবে বিশেষ করে গ্রুপ খাবারের সময় তরকারীর হাড়ির নিয়ন্ত্রন কিন্ত থাকে শেফ ভাইয়ের কাছে। ভাত এবং ডাল নেন ইচ্ছে মত তবে তরকারি তিনি নিজে দেবেন। এর প্রধান কারণ হল সুসম বন্টন নিশ্চিত করা। আর কিছুই নয়। নতুন, পুরনো সহকর্মী বা অতিথি যেই আসুক সবার পেটের হিসেব যেনো তার মুখস্ত। মেইন ডিস অর্থাৎ প্রধান তরকারী থেকে শুরু করে কোরমা, পোলাও, বিরিয়ানী বিশেষ কোন খাবার রাঁধলে নিজ হাতেই বাড়েন। মেন্যুও বৈচিত্রতা বজায় রাখেন শেফ ভাই।
আর রামাদানের পুরো মাস থাকে ইফতারি উৎসব। সময় পেলে নিজস্ব বিশেষ মেন্যু নিয়ে কিচেনে হাজির হন চ্যানেল এসের ফাউন্ডার মাহি জলিলও। খাবার নিয়ে হৈচৈ চলে সেহরি পর্যন্ত।
শেফ ভাই নাজিম উদ্দিনের ভলান্টিয়ারী কাজ শুধু এখানেই শেষ নয়। কমিউনিটির পরিচিত বা স্বজন যে কারো ছোট-বড় ঘরোয়া পার্টিতে হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। নাজিম উদ্দিন বিয়ানীবাজারের গুকর টেকা গ্রামের হাজী আছদ্দার আলীর ছেলে।
সুস্বাদু রান্না আর ভলান্টিয়ারী কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সেদিন তাকে বিশাল এক সারপ্রাইজ দিলেন ব্র্যান্ট কাউন্সিলের সাবেক মেয়র কাউন্সিলর পারভেজ আহমেদ।
কমিউনিটির সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব পারভেজ আহমদ ব্রেন্টের মেয়র হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কমিউনিটির অনেককেই তাদের কমিউনিটি কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ক্রেস্ট এবং সনদ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি ভুলে যাননি শেফ নাজিম উদ্দিনের কথা। তবে ব্যস্ত শেফ সেখানে গিয়েতো সনদ আনার সময় নেই। তাই সেদিন নিয়ে চ্যানেল এসের কিচেনেই হাজির হলেন কাউন্সিলর পারভেজ আহমদ। নিভৃতচারী স্বেচ্ছাসেবক শেফ নাজিম উদ্দিনকে অবাক করে দিলেন তিনি। ঘাম জড়ানোর শ্রমের অন্যরকম স্বীকৃতিতে বেশ আনন্দিত হলেন শেফ নাজিম উদ্দিন।