:: মুহাম্মদ শাহেদ রাহমান
বাংলাদেশের আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সবারমতো অধিরআগ্রহে প্রবাসীরা। দেশে জেগে উঠেছে তরুণরা। অক্টোবরে স্বদেশ ঘুরে অনেকের সাথে আলাপ করে এসে একটাই অনুভব করলাম সবাই শান্তি চায়, নির্বাচনের পরিবেশ উৎসবমুখর হোক, আইনের শাসন , সন্ত্রাস- দুর্নীতি মুক্ত সমাজ, এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকথা বজায় থাকুক এই প্রত্যাশা অনেকেরই।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই, বাতিল, আপিল, পুনর্বিবেচনা, প্রত্যাহার ইত্যাদির মাধ্যমে মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতির শুরু হয়েছে ।
বাংলাদেশের শহর বলেন, আর গ্রাম -গন্জ বলেন এখন সর্বত্রই নির্বাচনী আমেজ। উৎসবমুখর আমেজ থাকুক এটা আমরা সবাই চাই , শুধু তাই নয় নির্বাচন পরবর্তী যেন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না হয় সেদিকে নেতা কর্মীদের লক্ষ্য রেখেই এগুতে হবে।
এবার আসুন নির্বাচনে তরুন ও প্রবাসীদের নিয়ে কতটুকু ভাবছেন যথাযথ কর্তৃপক্ষ, ও নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা, ভবিষ্যত আইন প্রণেতারা। আমরা দেখতে পাচ্ছি এ সময়ে বাংলাদেশের সর্বত্রই এ পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো ও তাদের মনোনীত প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা চলছে, প্রার্থীরা নানা মাধ্যমে জনসংযোগ করছেন, ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন, তাঁদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো তুলে ধরছেন এবং ভোট চাইছেন।
ভোটেররা তাদের আমানত সঠিক ব্যক্তিকেই দেবেন, যার দ্বারা দেশ জাতি সমাজ উপকৃত হয় । আর এও দেখতে হবে সম্মানিত প্রার্থীরা জনগণের জন্য কি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তরুণদের কথা কি ভাবছেন, নারী, যুবকদের জন্য কি পরিকল্পনা আছে। প্রবাসীদের নিয়ে কি পরিকল্পনা আছে। প্রবাসীদের অনেক দাবী দাওয়া আছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষনা এসেছে প্রবাসীরা দুতাবাসের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। কিন্তু খুঁজ নিয়ে দেখা গেছে প্রবাসীরা এ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। এখানে প্রচারণা খুবই দূর্বল। প্রবাসে এ দায়িত্ব কার ?
এবার আসুন তরুণ ভোটার প্রসঙ্গে প্রার্থীর চিন্তা ভাবনা কি ?
আমার মতো এ রকম ভাবনা এই প্রজন্মের সব তরুণদের মনেই হয়তো এই একই প্রশ্ন, চিন্তা। বাংলাদেশের রাজনীতির কতটুক গুণগত পরিবর্তন হয়েছে, তা এখন ভাবনার বিষয় , কতটুকু আদর্শের রাজনীতি বিদ্যমান আছে । যাক তরুণদের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কোন রাজনৈতিকদল মনোনয়নের ব্যাপারে কতটা সচেতন ।
তা এবার নির্বাচনে পরীক্ষার পালা। তরুণদের ভোট একটি বিষয়ও বটে।
বাংলাদেশ তরুণেরা পছন্দ করে না— আদর্শ ও নৈতিকতা বিবর্জিত রাজনীতিবিদ। দুর্নীতিবাজ ও সামাজিকভাবে কলুষিত ব্যক্তি। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের মতাদর্শ ব্যক্তি। অতি রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট ও প্রতিহিংসামূলক মনোভাব, কূট সমালোচনা ও পরিবারতান্ত্রিকতা। এ রকম আরও অনেক কিছুই রয়েছে অপছন্দের তালিকায়।
বিষয়গুলোর দিকে যে দলই সুনজর দেবে তাঁরাই ভাগ্যবান হবেন।
অনেক তরুণ আমাকে বলেছেন- বর্তমান সরকারের অনেক অবদান রয়েছে আমাদের আর্থসামাজিক উনন্নয়ন, দেশের অবকাঠামো গতিশীল করা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ আরও বেশ কিছু জাতীয় ইস্যুতেও তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়।
পক্ষান্তরে দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামোর একটি অন্যতম চালিকা শক্তি হলো ব্যাংক। সেই ব্যাংকিং খাতকে নিয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগও তোলেছেন । রাজনৈতিক সহনশীলতা ও আইনের শাসন দেখতে চান তরুনরা।
দেখতে চান শহর ও গ্রামের সমান উন্নয়ন। গ্রামের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, শিক্ষার মানউন্নয়ন, স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন সঠিকভাবেই দেখতে চান। সর্বোপরি একজন মানুষের মৌলিক অধিকার গুলো সঠিক ভাবে বাস্তবায়িত হোক ইহা তরুণদের ভাবনা, সচেতন ভোটারদের প্রত্যাশা।
আর একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চান , প্রশ্নবিদ্ধ নয়।
এসব বিষয়গুলো মাথায় রেখেই তরুণদের ও সচেতন ভোটারদের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। আগামী দিনে কে হবে তাদের যোগ্য প্রতিনিধি। তরুণেরা দিন বদল ও পরিবর্তনের দিকেই বেশি আগ্রহী। আর সেই পরিবর্তন মানেই কি সরকারের পরিবর্তন! নাকি সরকারের বিগত দিনের ভুল ত্রুটি শুধরে নিয়ে নতুন অঙ্গীকারের পরিবর্তন? নাকি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা।